একজন সফল উদ্যোক্তার গল্প

এক নির্জন পরিবেশে বিছানায় সারা শরীর লাগানো এক তাগড়া যুবক ভাবছে তার সপ্নের কথা
জ্যাক-মা এর সফল হওয়ার হল্প


এক নির্জন পরিবেশে বিছানায় সারা শরীর লাগানো এক তাগড়া যুবক ভাবছে তার সপ্নের কথা কথা। বারবার নানা জায়গা থেকে বহিস্কৃত  এই যুবকের মধ্যে কোন হতাশা নেই। সে যেন এক সাগর আত্নবিশ্বাস নিয়ে বুকভরা স্বপ্ন তৈরি করছে।


টানা ৯ বছর ধরে প্রায় ৭০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পর্যটকদের এলাকা ঘুরিয়ে দেখাতেন শুধু ইংরেজী শিখবেন বলে। উদ্দেশ্য তার  একটাই, তার দেশ অর্থাৎ চীনের অর্থনৈতিক চাকা পরিবতন করা করা।

বলছি ই-কমার্স কোম্পানী আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা’র কথা। জ্যাক’মার এই নামটি মূলত তার জন্মগত ছিলো না। পারিবারিক সুত্রে জ্যাকমার পাওয়া নাম মা ইউন। পর্যটকদের সাথে কাজ করার সুবাধে একজন পর্যটকের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায় তার। তিনিই তাকে জ্যাক মা নামটি দেন। কারণ চায়না এই নামটি ইংরেজদের জন্য উচ্চারণ করা কঠিন ছিলো।  

আলী বাবা তৈরির আগে জ্যাক মা ছিলো একজন ব্যাথ মানুষ। ব্যর্থতার এমন উচ্চ স্থানে পৌছেছিলেন যে কলেজ পাশ করতে তার ৪ বার পরিক্ষা দেওয়া লাগে। চার বার ফেল করার  পর যখন পাশ করে কর্মজীবনে ঢোকা জ্যাক মা ব্যর্থতা যেন হাড়ে হাড়ে টের পেলেন। টানা ৩০টি চাকরীর আবেদন করে প্রত্যেকটিতেই প্রত্যাখাত হলেন। আমেরিকান এক টকশোতে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জ্যাক মা বলেছিলেন, আমার সাথে ১০ জন পুলিশের ইন্টারভিউ দিতে গেলে বাকি ৯ জনকে রাখলেও আমাকে বলা হয় তুমি উপযুক্ত নও।

জ্যাক মা বলে আমার কাছে যখন কেএফসি আসলো তখন আমরা ২৪ তখন আবেদন করেছিলাম।আমার সাথের ২৩ জনের চাকরী হলো, বাদ পড়লাম শুধু আমি। হার্ভাডে আমি ১০বার আবেদন করেও প্রত্যাখাত হয়েছিলাম।তিনি কম্পিউটার চালাতেও জানতেন না, ইন্টারনেট কি জিনিস তা ভালোভাবে বুঝতেন না কিন্তু তিনি এটা বুঝেছিলেন যে এই জিনিসটাই সারা দুনিয়াকে নতুন করে চলতে শিখাবে।

একটি সাক্ষাৎকারে জ্যাক মা বলছিলেন, প্রথম যেদিন আমরা ওয়েবসাইট শুরু করি তখন আমার বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব এবং টিভিসাংবাদিককে দাওয়াত করেছিলাম। খুবই ধীরগতির ইন্টারনেটে ওয়েবসাইটটির অর্ধেক লোড নিতেই প্রায় ৩ ঘন্টা সময় নিয়েছিলো।

আমরা সবাই আলীবাবা ও ৪০ চোরের কাহিনী জানি। ছোটবেলায় যখনও জ্যাক মা’র ব্যাপারে জানতাম না ঠিক তখনোও আমি বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বসেও আলীবাবা ও তার চোরদের কাহিনী পড়েছিলাম।

আলী বাবা নামটি নামকরনে নিয়ে জ্যাকমা বলেন, ইন্টারনেট যেহেতু সারা নওবে আছে সেজন্য আমার সাইটের নামও ইউনিক হওয়া চাই, সৌভাগ্যই বলতে হবে, চিন্তাটি মাথায় আসার পর তখন আমি এক হোটেলে খাবার খাচ্ছিলাম। ওয়েটার খাবার দিতে আসলে তাকে জিজ্ঞেস করলাম আলীবাবা চিনো? সে বললো চিনে। আমি বললাম সেটা কি? সে বললো- চিচিং ফাক।


বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে তরুণ ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্য জ্যাক মা সবচেয়ে বড় একটি উপমা হতে পারে। বারবার ব্যর্থতায় গ্রাস করা মানুষটিই পৃথীবীর সবচেয়ে কোম্পানীগুলোর একটি তৈরী করেছিলেন। হার্ভাডে প্রায় ১০ বার প্রত্যাখাত হয়ে নিজের মাকে বলেছিলেন ‘ওখানে পড়ার সুযোগ হয়তো পাইনি কিন্তু একদিন আমি ওখানে লেকচার দিব।’ হয়েছিলোও তাই। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন